স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাইল্ডস্ট্রোক করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার বিষয়ে কিছুই জানে না কারা কর্তৃপক্ষ।
খালেদা পড়ে যাওয়ার পর মাইন্ড স্ট্রোক করেছিলেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক যে তথ্য দিয়েছেন সে সম্পর্কে কারা কর্তৃপক্ষ অবগত নয় বলে জানিয়েছেন ।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যে গত ৫ জুন দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন সে সম্পর্কে কারা কর্তৃপক্ষ অবগত নয়। তবুও তার চিকিৎসকরা যে পরামর্শ দিয়েছেন সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
শনিবার কারা অধিদফতর কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির কথা বলেছেন। বাংলাদেশে তো পিজি হাসপাতাল অনেক বড়। এখানেও কিন্তু তার সব ধরনের চিকিৎসাই সম্ভব। তবুও তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট পাবার পর পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গেলো ৫ জুন মাইল্ডস্ট্রোক করে ৫-৭ মিনিট অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন বলে জানান খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এফ এম সিদ্দিকী।
শনিবার বিকেল ৪টার দিকে তিনিসহ সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসক দলের সদস্যরা নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢোকেন। পরে পৌনে ৬টার দিকে কারাগার থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান এফ এম সিদ্দিকী।
এফ এম সিদ্দিকী বলেন, চার পাতার মেডিকেল রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, খালেদা জিয়ার বড় ধরনের স্ট্রোক হতে পারে। তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিতে কারাগারের গিয়েছিলেন তার চার চিকিৎসক। এফ এম সিদ্দিকীসহ অন্য তিনজন হলেন ডা. ওয়াহিদুর রহমান, ডা. এম এ কুদ্দুস ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, খালেদা জিয়া গত ৫ জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে যান। সম্প্রতি কারাগারে তার নিকটাত্মীয়রা দেখা করতে যান।
তিনি জানান, খালেদা জিয়া গত তিন সপ্তাহ ধরে ভীষণ জ্বরে ভুগছেন, যা কোনোক্রমেই ঠিক হচ্ছে না। চিকিৎসাবিদ্যায় যেটিকে বলা হয় টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক)। দেশনেত্রীর দুটো পা এখনো ফুলে আছে এবং তিনি তার শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছেন না।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির ১ হাজার ১০১ জন চিকিৎসক তাকে ইউনাইটেড হাসাপাতালে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন।
Discussion about this post