সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃএবার সাতক্ষীরার ৪১ শ’ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। এর থেকে উৎপাদন পাওয়া যাবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে সাতক্ষীরা থেকে মোট ২০০ মেট্রিক টন বিষ ও বালাইমুক্ত নিরাপদ আম রফতানি হবে। বাজারে বিষমুক্ত আম সরবরাহ ও বিক্রি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও অনেকাংশে তা মানা হচ্ছে না। অধিক মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে, আম পকানোর জন্য ব্যবহার করছে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল। জেলার বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী ঘর নির্মান করে আম সাজিয়ে রেখে গোপনে এই ক্যামিকেল মিশানো হচ্ছে। ক্যামিকেল মেশানোর একদিন পর জেলা ও উপজেলা শহরের বাজার সহ বিভন্ন বাজারে এসব অাম বিক্রয় কর হয়। তাছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে এসব আম কার্টুনে ভরে ট্রাকে করে পাঠানো হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। দেশব্যাপী সাতক্ষীরা জেলার আমের সুখ্যাতি থাকায় ক্যামিকেল দিয়ে পাকানো এসব আম কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। পড়ছে অনেকের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতেই বাজারে বিষমুক্ত আম সরবরাহ ও বিক্রি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে আমে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল না মিশিয়ে বাজারজাত করতে পারে সে জন্য সচেতনাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিয়িমিত বাজার পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আসায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাগান থেকে কাচা আম পেড়ে দ্রুত পাকানোর জন্য ক্ষতিকারক ক্যামিকেল ব্যবহার করছে। সকালে বাগান থেকে পাড়ার পর দুপুরে দিকে এসব আম কিছু নির্দিষ্ট স্থানে এনে মাটিতে বিছানো কাগজ কিম্বা পলের উপর রেখে স্প্রে করা হচ্ছে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল। এতে করে কাচা আমে দ্রুত পাকা হলুদ রং চড়ে যাচ্ছে। জেলার শ্যামনগরের উপজেলা বাজার , বুড়িগোয়ালিনি, ভুরুলিয়া, কৈখালী, পদ্মপুকুর,কাশিমাড়ি বাজার। কালিগঞ্জ এর কুশুলিয়া বাজার, মৌতলা, নলতা , ধলবাড়িয়া , শ্রীপুর বাজার। দেবহাটার শ্রীপুর বাজার,গাজীরহাট বাজার, পারুলিয়া খেজুর বাড়িয়া,ঈদগাহব, কুলিয়া , বহেরা বাজার। আশাশুনির উপজেলা সদরের বাজার সহ বসখালী , কামালকাটি, বড়দাল বাজার। তালার উপজপ জেলা শহরের বাজারসহ কমিরা, মাগুরা,সারুলিয়া, জাতপুর বাজার। কলারোয়ারর সদরের বাজারসহ জয়নগর, হেলাতলা,যুগিখালি, চন্দন পুর, দেয়ারা বাজার। সাতক্ষীরা সদররের লাবসা, আগরদারি, আলীপুর বাজার সহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসব আম কার্টুন কিম্বা প্লাষ্টিকের ক্যারেটে ভরে সন্ধ্যায় ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।উক্ত জেলার এলাকায় খোলা মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে স্প্রে করার জন্য আম সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। গোবিন্দ ভোগ, হিম সাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালীসহ বিভিন্ন আমের সেখানে রাখা আছে ক্যামিকেল স্প্রে। ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রির আশায় কাচা আম গাছ থেকে পেড়ে ক্যামিকেল মিশিয়ে জেলার বাইরে পাঠাচ্ছে। কিছু গাছে পাকা আম দেখা গেলেও অধিকাংশ রয়েছে কাচা আম। জিজ্ঞাসা করতেই ব্যবসায়ীরা জানান, আমের আটা শুকানোর জন্য এভাবে রাখা হচ্ছে। আম ব্যবসায়ী কে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানান আমে কোন ক্যামিকেল মিশানো হয় না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, আম সাজানোর পরেই রং চড়ানোর জন্য একটা ঔষধ স্প্রে করা হবে। পরে সন্ধ্যায় ক্যারেটে ভরে ঢাকায় পাঠনো হবে এই আম। তবে এসব আম শহরের বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা বাজার ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নিরাপদ এলাকায় আম পাকানোর এ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে সচেতন মহলের দাবী আমে যাতে কোন অসাধু ব্যবসায়ী আর ক্ষতিকারক ক্যামিকেল না মেশোতে পারে সেজন্য প্রশাসন যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করেন। এদিকে এবারও সাতক্ষীরার আম ইউরোপের বাজারে রপ্তানী হচ্ছে। তাছাড়া আমে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল মিশানো বন্ধ করতে আম ব্যবসায়ীদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজার পর্যবেক্ষন জোরদার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার অনেক আম ব্যবসায়ীকে আমে ক্যামিকেল মেশানোর অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। তাই ক্যামিকেল মুক্ত অাম বাহিরে পাঠানো সহ বাজারে যেন পাওয়া না যায় সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
Discussion about this post