শাহিন আলম রাজশাহীঃ রাজশাহী দুর্গাপুরে দেশি পদ্ধতিতে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করছে খামারিরা। ‘ঈদুল আযহা’কে সামনে রেখে রাজশাহীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গরু খামারিরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে গরুর পরিচর্যা।
ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন রাজশাহীর জেলা এবং উপজেলা খামারি ও কৃষকরা।
ঈদে দেশীয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় খামারের পাশাপাশি গরু মোটাতাজা করছেন জেলার অনেক কৃষক। তবে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং গতবার লাভ কিছুটা কম হাওয়ায় এবার খামারে গরু পালন কমেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ১শ টি গরুর খামার রয়েছে। এছাড়াও উপজেলায় ৩ হাজার পরিবারে ২-৩টি করে গরু প্রাকৃতিক ভাবে মোটা তাজাকরণ করা হচ্ছে। উপজেলায় এসব খামার ও পরিবার থেকে কোরবানির জন্য ১২হাজার গরু টার্গেট করা হয়েছে। এছাড়াও ২৫হাজার ছাগল স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মোটা তাজাকরণ করা হচ্ছে।এসব সুস্থ গরু নিজ উপজেলার চাহিদা পূরুণ করে ঢাকায় কোরবানির হাটে রপ্তানি করা হবে।
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার রফিকুল ইসলাম নামের এক মৌসুমী ব্যবসায়ী জানান, এই এলাকায় বেশির ভাগ খামারীরা দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস খড়ের পাশাপাশি খৈল গুড়া, ভূষি খাওয়ানো হচ্ছে। তাছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় গরুর চাহিদা থাকায় খামারিদের পাশাপাশি অনেক কৃষক পরিবারে গরু মোটাতাজা করেছে। তিনি আরও বলেন, গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে গরুতে লাভ কিছুটা কমে গেছে।
আরো জানতে চাইলে, দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, গত ঈদের শেষ মূহুর্তে গরুর দাম কমে যাওয়ায় এই লোকসান গুণতে হয়। গরু উৎপাদন করে লাভতো দূরের কথা প্রতি বছরই লস হচ্ছে। তাই এবার প্রাকৃতিক উপায়ে ১০টি গরু মোটা করছি।
তিনি আরো বলেন বর্তমানে একটি গরু উৎপাদন করতে যে খচর হচ্ছে, বিক্রি করলে সেই টাকা উঠানো যাচ্ছে না। কয়েক বছরে গরুর সব খাবারের দাম দ্বিগুণ হলেও গরুর দাম তেমন বাড়েনি।
দুর্গাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু আনাস জানান, “কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি উপজেলায় আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রতি উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি হাটে এই মেডিকেল টিম কাজ করবে। পশুর রোগ প্রতিশোধক ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত রয়েছে। খামারি এবং কৃষকদের মাঝে চাহিদামত তা ব্যবহার করা হবে।”
তিনি আরও জানান, “দুর্গাপুরে এখন গরু মোটাজাতাকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয় না। আমরা গ্রামের প্রত্যন্ত মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণে সারা বছর প্রশিক্ষন দিয়ে যাচ্ছি। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারনা ও লিফলেট বিলি করে আসছি।ছবি ফাইল ফটো