বিশেষ প্রতিবেদকঃবৈশ্বিক অর্থনীতির ভারসাম্য ঠিক রাখতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাবিশ্ব গৃহবন্দী থাকার সিদ্ধান্ত বাদ দিয়েছে। তবে জীবনের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘরের বাইরে যাওয়া প্রত্যেকের মুখে মাস্ক নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে বলা হলেও অধিকাংশ মানুষ তা মানছে না। ফলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনকেও কঠোরভাবে আটক ও জরিমানা দিয়ে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) নগরীর জনসমাগম পূর্ণ এলাকায় নগরবাসীর মাস্ক নিশ্চিত করতে পৃথক আটটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। নগরীরবিশেষ পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে মাস্ক পরিধানে সচেতনতা নিশ্চিত করতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর চকবাজার এলাকায় মো. জিল্লুর রহমান, রিয়াজউদ্দীন বাজার এলাকায় মো আলী হাসান, টেরিবাজার এলাকায় এস.এম. আলমগীর সোহেল, আগ্রাবাদ এলাকায় মো. আশরাফুল আলম, সদরঘাট এলাকায় রেজওয়ানা আফরিন, পতেংগা এলাকায় গালিব চৌধুরী, পাহাড়তলী এলাকার মো. ওমর ফারুক ও কাজীর দেউড়ি এলাকার মারজান হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রসঙ্গে মাঠ পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাওয়া হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরীর সাথে। তিনি (মঙ্গলবার) নগরীর পতেঙ্গা থানা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, মানুষ একদমই সচেতন নন। অধিকাংশ মানুষ সাথে মাস্ক রাখলেও মাস্ক পরিধান করছে হাতেগোনা কয়েকজন। ছবি তোলার জন্য কিংবা খাবার জন্য এমন আরো নানা অজুহাতে মানুষ মাস্ক পরিধান করছে না। তারা কেউ বোঝার চেষ্টা করছে না যে, করোনা এসব অজুহাত ও অসর্তকতা বুঝবে না। তাই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মাস্ক ছাড়া যাদের পেয়েছে তাদেরকে জরিমানা এবং মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে।
সচেতনতা সৃষ্টিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলা হয় জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আমরা নগরীর সব এলাকায় মাইকিং করেছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ এখনো চলমান আছে। এছাড়াও আমরা নগরীতে ২ লাখ মাস্ক বিতরণ করেছি। একইভাবে গ্রাম পর্যায়ে মাইকিং করা হচ্ছে এবং প্রতিটি উপজেলায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা নগরীসহ গ্রামের প্রতিটি মানুষের জন্য মাস্ক নিশ্চিত করতে চাই। করোনায় দ্বিতীয় ওয়েব ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। মানুষকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। তা না হলে মানুষ নিজেদের আক্রান্ত করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও আক্রান্ত করে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলবে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আসলে আটক-জরিমানা করে কাউকে সচেতন করা যাবে না। সবাইকে নিজ থেকে সচেতন হতে হবে। কেননা করোনার প্রথম ধাক্কায় কতজন আক্রান্ত হয়ে ভুগেছে, কতজন মারা গেছে তা সবাই দেখেছে। এখন বাইরের দেশগুলোর দিকে দেখলে বুঝা যাচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা কোন পর্যায়ে যাচ্ছে। তাই নিজে থেকে সচেতন হতে হবে। নতুবা এর ভয়াবহতা আমাদের সবাই জানার পরেও এর ফল ভোগ করতে হবে।