জম্মদিনেই লাশ পোড়ানো হলো ঢাকায় বাসচাপায় নিহত এসআই উত্তম। নিহত এসআই উত্তম সরকারের জন্মদিন ছিল সোমবার। জন্মদিনে নিজ বাড়ীতে লাশ হয়ে ফিরলেন তিনি। নিহত এসআই উত্তমের বাড়ী টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার পশ্চিম বেতডোবা কর্মকার পাড়ায়। সোমবার সন্ধ্যার পর লাশ বাড়িতে আনার পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। স্ত্রী তমা রানী ও মা কামনা সরকারসহ স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে গোটা পাড়া। রাতে তাকে কালিহাতী কেন্দ্রীয় শ্মশান ঘাটে সৎকার করা হয়। মৃত ভজন সরকার ও কামনা রানী সরকারের দুই ছেলের মধ্যে উত্তম ছোট। বড় ছেলে দিপংকর সরকার সুমন ঢাকায় নাভানা গ্রুপে চাকরী করেন। তিনি জানান, উত্তম ১৯৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কালিহাতীর আরএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কালিহাতী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভারতের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে বিবিএ এবং ঢাকার ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে এমবিএ পাস করেন। ২০১২ সালে পুুলিশের এসআই পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা, মোহাম্মদপুর এবং সর্বশেষ রূপনগর থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি আরও জানান, উত্তম ২০১৪ সালে ঢাকার ধামরাইয়ের তমা রানী চৌধুরীকে বিয়ে করেন এবং তাদের উপমা সরকার নামের ৩ মাসের কন্যাসন্তান রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ীতে উত্তমের স্ত্রী তমা রানী ও মা কামনা সরকার বারবার মূর্ছা লেগে পড়ে যাচ্ছেন। তমা রানী বিলাপ করতে করতে বলছেন, আমি তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাব, আমার কী হবে, আমাকে কে দেখবে? মা কামনা সরকার বলেন, আমার বাবাকে (উত্তম সরকার) জন্মদিনেই পোড়ানো হলো। আমি এই বেদনা সইতে পারছি না, আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। আমি হত্যকারীর ফাঁসি চাই। উত্তমের লাশ সন্ধ্যার পর কালিহাতীর বাড়ীতে পৌঁছানোর পর তার স্বজনদের কান্নায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। লাশ দেখার জন্য বাড়ীতে ছুটে আসেন এলাকার শত শত মানুষ। উত্তমের বন্ধুরা জানান, উত্তম অনেক মেধাবী এবং ভাল মনের মানুষ ছিলেন। পরে রাতে কালিহাতী কেন্দ্রীয় শ্মশান ঘাটে সন্ধ্যায় এসআই উত্তম সরকারকে দাহ করা হয়।