রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষায় মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (রোগ পরীক্ষার উপাদান) ব্যবহারের প্রমাণ পেয়ে এবার রাজধানীর প্রসিদ্ধ রোগ নির্ণয় কেন্দ্র পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দুপুর একটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ধানমন্ডি-২ নম্বর সড়কে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে এই আদেশ দেন।
অভিযানে র্যাব-২ ভ্রাম্যমাণ আদালতের পাশাপাশি অংশ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি দল।
ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির লেভেল-১০ এর স্টোর রুম থেকে বিপুল পরিমাণ রি-এজেন্ট উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে সিমেন্স গ্রুপের স্ট্যান্ডার্ড হিউম্যান প্লাজমার মেয়াদ ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং ক্যাপিলারিস ইমিউনোটাইপিংয়ের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুনে শেষ হয়।
অভিযানকারী দলটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৭ তলার ল্যাব এবং ১০ তলার গুদাম কক্ষ তল্লাশি করে।
এই প্রতিষ্ঠানের গুদামে সংরক্ষিত মেয়াদউত্তীর্ণ রিএজেন্ট কেবল এখানে ব্যবহার করা হতো না, বরং পপুলারের বিভিন্ন শাখায় তা পাঠানো হতো। আর এই অভিযোগ পেয়েই অভিযানে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আমাদের কাছে ময়মনসিংহ থেকে একটা অভিযোগ ছিল যে, সেখানকার পপুলারে ঢাকার মেয়াদউত্তীর্ণ রি-এজেন্ট পাঠানো হতো। বাক্সের গায়ের ২০১৬ সালের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ বদলে তারা নতুন করে ২০১৮ সাল লিখত। এখানে অভিযানে এসে আমরা মারাত্মক ত্রুটি খুঁজে পাই।’
‘তাদের ল্যাবের মেশিনের ভেতরে, স্টোররুমে বিপুল পরিমাণ রি-এজেন্ট পাই। এদের কোনটির মেয়াদ ২০১৬ সালে কোনটির ২০১৭ সালে শেষ হয়েছে।’
রি-এজেন্ট মেয়াদত্তীর্ণ হলে পরীক্ষায় সঠিক রোগ ধরা পড়তে নাও পারে। আর এই প্রতিবেদনের ওপর চিকিৎসা হলে চিকিৎসাও ভুল হতে বাধ্য।
সারওয়ার আলম বলেন, ‘তারা (পপুলার) ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করছে। এ কারণে তাদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
গত ১৭ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত সংরক্ষণ ও ২৩ ধরনের অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির পপুলারকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আজকের এবার অভিযানে এমডি কিংবা সিইও কাউকে না পেয়ে সিলগালা করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করলে এখানে চিকিৎসাধীন ও টেস্ট করিয়েছেন এমন অনেক রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে পরবর্তীতে এমন অভিযোগ পেলে তাদের আরও বড় শাস্তি দেয়া হবে।’
রোগ পরীক্ষার জন্য মেয়াদউত্তীর্ণ রি এজেন্ট ব্যবহারের প্রমাণ এর আগেও পাওয়া গেছে রাজধানীর প্রসিদ্ধ চিকিৎসালয়ে। গত ২১ মার্চ একই অপকর্মের প্রমাণ পেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Discussion about this post