ভুমিহীন আসপিয়া মাথা গোজার ঠাই পাচ্ছেন। একই সঙ্গে পাচ্ছেন পুলিশের চাকুরি। যেটি ভুমিহীন বলে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তার জন্য সরকারি জমিসহ পুলিশের চাকুরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণে হিজলা উপজেলা প্রশাসনকে সরকারি জমি খুঁজতে বলেছেন।
পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় শরীরিক, লিখিত ও মৌখিকসহ সাত ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হিজলা উপজেলার বাসিন্দা আসপিয়া। মেধা তালিকায় হয়েছেন পঞ্চম। তবে পুলিশের প্রতিবেদনে তার নিজেদের ভূমি নেই,এটাই ছিল তার চাকরি পেতে বাধা।
হতাশায় বুধবার বরিশাল পুলিশ লাইন্সের গেটে দীর্ঘক্ষণ বসেছিলেন আসপিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ছবি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার থেকে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।
তবে এখন চাকরি পেতে আর কোনো বাধা নেই আসফিয়ার। পুলিশের প্রতিবদনে ‘ভূমিহীন’ আছপিয়া ইসলাম কাজল হিজলাতেই জমি ও ঘর পাচ্ছেন। তাও খুবই অল্প সময়ের মধ্যে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া স্যার শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ফোন দেন। তিনি বলেন, আসপিয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আসপিয়া যাতে কনস্টেবল পদে চাকরি পেতে পারে সেজন্য সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে আসপিয়ার জন্য জমির স্থান নির্ধারণ করতে হিজলার ইউএনওকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণ সম্ভব হবে।
এদিকে পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, আসপিয়া ইসলাম কাজল যাতে পুলিশ কনস্টবল পদে চাকরি পেতে পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণে বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাসজমি ঘুরে দেখেছি। উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নে কয়েক শতাংশ জমি পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে সেখানে ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। জেলা প্রশাসক স্যারের মতামত পেলে কাজ শুরু হবে।
বরিশাল জেলা পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ কমিটির সভাপতি জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল পদে আসপিয়ার নিয়োগ বাতিল করা হয়নি। নিয়োগ আবেদনে তার স্থায়ী ঠিকানা ভুল উল্লেখ ছিল। বিষয়টি ভেরিফিকেশনে উঠে আসে। তবে তার চাকরি হবে না, এটা কখনও বলা হয়নি। আসপিয়া যেন এ কারণে নিয়োগবঞ্চিত না হন, সেজন্য নিয়মের মধ্যে থেকে করণীয় সম্পর্কে ভাবা হচ্ছে।