যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় মুসলিম বিশ্বের প্রধান সমস্যা কি?উত্তর আসবে, গোটা মুসলিম বিশ্বই তো সংকটে রয়েছে।তারপরও ইয়েমেন,সিরিয়া, ভারত এবং আফগানিস্তানের কথা বিশেষভাবে বলতে হয়। তবে হা,প্রধান সমস্যা একটাই- “ফিলিস্তিন ইস্যু”।
মুসলিম বিশ্বে বর্তমান সমস্যাবলীর মধ্যে “ফিলিস্তিন ইস্যু” প্রধান সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে ফিলিস্তিনিরা প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলেছে তাদের মুক্তির আশায়। কিন্তু এই সংগ্রামে যাদের তারা কাছে পাওয়ার আশা করেছিল আজ তারা কাছে থেকেও দূরে।
তারপরেও থেমে নেই তারা,করে চলেছে সংগ্রাম। প্রকৃত অর্থে আরব ও পশ্চিমা মিত্ররা ফিলিস্তিন-এর মুক্তি বা আজাদি চায় না। কারণ তারা চায় দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায় থাকতে যার জন্য প্রয়োজন ইসরাইল ও পশ্চিমাদের তাবেদারি যা আমরা এই সময়ে প্রত্যক্ষ করছি।
বেশিরভাগ মুসলিম এবং আরব সরকার ও রাজা-বাদশাহরা ভুলে যেতে বসেছে,”আল আকসা” ইসলামের অংশ। মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের উচিত ছিল ইসরাইলের বিরুদ্ধে বয়কট,বিনিয়োগ প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সকল বৈধ পন্থা অবলম্বন করা।যার মধ্য দিয়ে তাদের উপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি হত।কিন্তু হল তারই বিপরীত।সৌদি ও তুর্কি সরকার ফিলিস্তিন-এর জন্য মুখে ভালোবাসা দেখায় কিন্তু তাদের অন্তরে ইসরাইল।তারা কূটনীতিক বিনিয়োগ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপে আগ্রহী নয়। আর তারাই মুসলিম বিশ্বের অভিভাবকরূপে আবির্ভূত হতে চায়। এই হল আরব ও ওসমানীদের আসল চেহারা।
৫ এ জুন, ২০২০ আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ৫৩ বছর পূরণ হল কিন্তু এর উত্তাপ এখনও মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান।ইসরাইল দিন-দিন আরবদের ভূমি চুরির পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছে।বর্তমানে তারা সিরিয়া ও জর্ডান বর্ডারে রয়েছে।তারপর সৌদি ও আরব আমিরাতের পালা। কিন্তু এই চিন্তা আরবদের মাঝে নেই।কাজেই আরবদের বোঝা দরকার ফিলিস্তিন সংকট মানে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে “ওআইসি ও আরবলীগ”-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।শক্তিশালী দুইটি সংগঠন থাকতে কেন “আল আকসার” মুক্তির পথ ত্বরান্বিত হয় না? তাদের দায়িত্ব কি সভা ও সেমিনারের মধ্যে সীমাবদ্ধ?তাদের মূল কর্তব্য ছিল,ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও আন্তর্জাতিক অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ইসরাইলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা।তবে ইরানসহ গুটিকয়েক দেশের প্রশংসা করতে হয়। কেননা তারা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য মরিয়া।অর্থ-বিত্ত ও সামরিক সাহায্য তাদের জন্য অব্যাহত রেখেছে তারা।
সেইসাথে “আয়াতুল্লাহ খোমেনির”ও।কারণ তিনি ‘বিশ্ব আল কুদস’ দিবস তথা কুদস মুক্তি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।এ দিবস-এর লক্ষ্য মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা মসজিদকে ইসরাইলের দখল থেকে মুক্ত করা ও ফিলিস্তিনের আজাদি। প্রায় দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই আন্দোলন কাজ করে চলেছে।বর্তমানে বিশ্বের ৮০ টিরও বেশি দেশে “আল কুদস” দিবস পালন করা হয়।শুধু যে মুসলিম দেশে এ দিবস পালন করা হয় তা নয়, অমুসলিম দেশেও পালন করা হচ্ছে এ দিবস।
মুসলিম রাষ্ট্র-নেতাদের উচিত হবে, আল কুদস মুক্তির আন্দোলনের সাথে মিলে ফিলিস্তিন-এর মুক্তির পথকে সুগম করা। আর এর মাধ্যমে তৈরি হবে মুসলিম ঐক্য।
কলামিস্ট, মিজান রেহমান ।
Discussion about this post