মোঃরেজাউল করিম (বগুড়া জেলা প্রতিনিধি) বগুড়া শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নের জুয়ানপুর কুঠিরভিটা গ্রামে একটি বাড়িতে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে দুই জঙ্গি নিহত এবং বিস্ফোরক উপাদান আইনের মামলায় জেএমবির নারী সদস্যসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল গ্রহনj করেছে আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু রায়হানের আদালতে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এসআই এবাদ আলী মোল্লা দুটি চার্জশিট দাখিল করেন। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। মামলা দুটির উল্লেখিত আসামিরা হলেন, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের জুয়ানপুর কুঠিরভিটা গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান ওরফে মাহবুব আলম মধু ,নওগাঁ মান্দা উপজেলার পারাইল হাজীপাড়ার মৃত লোকমান প্রামানিকের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে দেলোয়ার মিস্ত্রি, ও হেদায়েত হোসেন সংগ্রামের স্ত্রী সুমাইয়া আকতার পলি,দুপচাঁচিয়ার সর্জনকুড়ি গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে মোহায়মিনুল ইসলাম শিহাব ওরফে কাওসার,বগুড়ার শিবগঞ্জের মৃত মকছেদ আলীর ছেলে দিলবর হোসেন বাদশা, শিবগঞ্জের পারদিলালপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আবদুল করিম ওরফে হারিজ, , গাইবান্ধার সাঘাটার রাঘবপুর বুদমারিঘাটের মাওলানা ওসমান গণি মন্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধী ওরফে সুবাস ওরফে টাইগার ওরফে আদিল ও শান্ত ওরফে জাহিদ, গাবতলীর গোরদহ সরকারপাড়ার জোব্বার আলী সরকারের ছেলে খাদেমুল ইসলাম ওরফে বাদশা, গোরদহ দক্ষিণপাড়ার মোখলেসার রহমান প্রামানিকের ছেলে আজাদ প্রামানিক এবং শাজাহানপুরের ক্ষুদ্র কুষ্টিয়ার আলী মোল্লার ছেলে রাজিবুল ইসলাম ওরফে বাঁধন ওরফে বাদল। এজাহার সূত্রে জানা যায়, পহেলা বৈশাখ বা যে কোন অনুষ্ঠানে নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আসামিরা বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের জুয়ানপুর কুঠিরভিটা গ্রামের মাহবুবুর রহমানের বাড়ি ভাড়া নেয়। গত ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল রাতে ওই বাড়িতে জঙ্গিরা বোমা তৈরি করছিল। হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণে জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক শাখা প্রধান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে রাইসুল ইসলাম খান(২৬) এবং জেএমবি সদস্য কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সিরাজগঞ্জ সদরের জামুয়া গ্রামের মওলানা আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে তরিকুল ইসলাম জুয়েল (৩০) মারা যায়। পরদিন সোমবার ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের ডিবি এর কাউন্টার টেরোরিজম ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ডিডিশন এর সহকারী কমিশনার রহমতুল্লাহ চৌধুরী ও তৎকালীন বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের টিম জেলার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ দল ওই বাড়িটিতে তল্লাশী করে সেখান থেকে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২০টি সক্রিয় হ্যান্ড গ্রেনেড, ৪০ রাউন্ড গুলি, ২টি হাসুয়া, ১টি বাজাজ মোটর সাইকেল ও ১টি বাইসাইকেল, কয়েকটি মোবাইল সিম, বাড়ির মালিকের জনতা ব্যাংক শেরপুর শাখার ৬১৬নং হিসাবের কয়েকটি চেকবহি এবং ৩ শতাধিক গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম ও কাঁচামাল উদ্ধার করেন। এছাড়া ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ডিভিশনের বোমা নিক্রিয়করণ দল উদ্ধারকৃত গ্রেনেডগুলো পাশের একটি মাঠ ও লোকালয় শূণ্য বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ব্যাপারে শেরপুর থানার তৎকালীন উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) বুলবুল ইসলাম ওই ঘটনায় নিহত দুই জঙ্গিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও নাশকতার মামলা করেন। এজাহারে অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করা হয়েছিল। এ ঘটনায় পুলিশ ৩৯ জনকে গ্রেফতার করে। তাছাড়া এ মামলার তদন্ত শেষে ১০ আসামির বিরুদ্ধে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ-বিধির ৩০২ ধারায় এবং ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনে ৩, ৪ ও ৬ ধারায় পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার এসআই এবাদ আলী মোল্লা।
Discussion about this post