নিজস্ব প্রতিবেদক:নোটিশের তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ ( সিডিএ ) ইউএসটিসির ভবন ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ ইউএসটিসি কতৃর্পক্ষের। সিডিএ’র এই ধরনের হঠাৎ অভিযানের ফলে স্তম্ভিত ইউএসটিসি কতৃর্পক্ষ।
এতে করে ইউএসটিসির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। ইউএসটিসি কতৃর্পক্ষ ও শিক্ষার্থীরা কোন কূলকিনারা না পেয়ে মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এর একটি বিহিত ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন। ইউএসটিসি কতৃর্পক্ষ বলেন কোনো নোটিশ ছাড়া ভবন ভাঙ্গা শুরু করে সিডিএ।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ’র) প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে ভবনটি নির্মাণ করেছে ইউএসটিসি কতৃর্পক্ষ। ডিজিটাল সার্ভে করে তাদের জমি দেয়া হয়। পূর্বে কখনো গয়না ছড়া খালের চিহ্ন সিডিএ’র অনুমোদিত ভবনের নকশাতেও ছিলনা। বহুতল ওই ভবনটি ইউএসটিসির একাডেমিক এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে ১৮ বছর আগে ওই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ।
ইউএসটিসির উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৯৯২ সালে রেলওয়ে ৯৯ বছরের লিজ দিয়ে যথাযথভাবে এক একর ভূমি হস্তান্তর করে। ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিডিএ চিঠি দিয়ে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষকে ১৬ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়। জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল আরএস অনুসারে। ভবন নির্মাণের পর গত ১৫ বছর ধরে সেখানে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। খালের উপর পড়লে সিডিএ ওই সময় ভবন নির্মাণের অনুমোদন কিভাবে দিল?
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে একবার সিডিএ’র উচ্ছেদ অভিযানের পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় বিষয়টির ‘সমাধান’ হয়েছিল বলেও দাবি করেন উপাচার্য।
তিনি বলেন, ইউএসটিসি ভবনের সীমানা দেয়াল থেকে আরএস মৌজা মোতাবেক খাল ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ৪০ ফুট প্রশস্ত জায়গা আছে। ওটা ২০ ফুটের খাল। অনায়াসে রাস্তার নিচ দিয়ে বঙ কালভার্ট করে কম খরচে প্রকল্প সম্পন্ন করা সম্ভব।
“গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বলেছে, এভাবে করে দেবেন। সেখান থেকে এসে দুই মাসের মাথায় এভাবে ভবন ভেঙ্গে দেয়া হল! আমি নিজে সিডিএ চেয়ারম্যানসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে গিয়েছি। ৪০ ফুট দূর দিয়ে খাল যাওয়ার কথা। তাহলে কেন এমন হল?” অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একজন উপাচার্য হিসেবে এ ঘটনায় আমি কেঁদেছি।
আমরা ক’দিন বাঁচব। এটা তো কেউ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। এটা একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এসে এখান থেকে ডিগ্রী নিয়েছে। এখনও বহু দেশের শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছে। এই প্রতিষ্ঠানে নানা রকম বায়ো টেকনোলজি, ন্যানো টেকনোলজি এবং ফার্মেসি বিষয়ক গবেষণা হচ্ছে। সমপ্রতি ইউএসটিসি সিন্ডিকেট ১৬তলা অ্যাকাডেমিক কাম ইনস্টিটিউট ভবনে ‘সায়মা ওয়াজেদ সেন্টার অব হোপ ফর অটিস্টিক চিলড্রেন’ স্থাপনের অনুমোদন পেয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু হয়।
একই ভবনে ‘ন্যাশনাল প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোল্যুশন’ স্থাপনে ইউএসটিসি সিন্ডিকেট ২০১৯ সালের ১০ মে অনুমোদন দেয়। ইউএসটিসির কতৃর্পক্ষ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই সব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইউএসটিসির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আবছার, আইএএইচএস-এর অধ্যক্ষ ডা.এএমএম এহতেশামুল হক, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক ডা. কামরুল ইসলাম, পরিচালক ডা. নজরুল কাদের শিকদার, প্রক্টর নূরে আলম সিদ্দিকী, ইংরেজি বিভাগের প্রধান মো. আবদুর রশিদ ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিনিধি ডা. তাহিয়া তসলিম চৌধুরী।
সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেছে। তারা ভবনের একটি অংশ খালের ওপর নির্মাণ করেছে। আবার নকশা অনুযায়ী ভবনটি নির্মাণ করা হয়নি। তাই ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে
Discussion about this post