৭১ বাংলাদেশ ডেস্কঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুরা বিচ্ছিন্ন নয়, তারা সমাজেরই অংশ। তাদের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভা খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, সুস্থরা পারে না, কিন্তু প্রতিবন্ধীরা আমাদের অলিম্পিকের স্বর্ণ এনে দেয়। তাই তারা আমাদের সম্পদ। তাদের সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের কাজ।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন উৎসবে মানুষের কাছে আমি যেসব কার্ড পাঠাই, তা অটিস্টিক শিশুদের আঁকা কার্ড। প্রধানমন্ত্রীর কার্ড সাধারণত ২০ থেকে ২৫ হাজার কপি ছাপানো হয়। এভাবেই আমি কয়েক বছর থেকে অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুদের হাতে আঁকা ছবি দিয়েই শুভেচ্ছা কার্ড বানিয়ে তা পাঠিয়ে আসছি।’
একাদশ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অটিজম বিষয়ে সরকারের ভূমিকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজমের ওপর একটা রেজ্যুলশনও গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ। শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী একটা সচেতনতা শুরু হয়েছে। আমাদের দেশেও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোকদের জন্য প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা কমপ্লেক্স তৈরি করতে চাই। অটিস্টিক হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের মৃত্যু পর্যন্ত সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে এখানে। সূচনা ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশনও করে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ হলো, প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
শেখ হাসিনা বলেন, চিকিৎসা সেবা ছাড়াও অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের জন্য। এছাড়াও সাভারে ১২ একর জমিতে ইতোমধ্যে ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্থ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তারা মিলেমিশে খেলবে। আবার তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও আমরা করব। খেলাধুলা ছাড়াও বিসিএসে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা এবং সরকারি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে ১০ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। আমি চাই আমাদের দেশের সুস্থ মানুষদের যেমন আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি; প্রতিবন্ধীদেরও যেন সেভাবে সবরকম সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সমাজকে আরো সচেতন হতে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ এটা তো তাদের জন্মের দোষ না। আল্লাহ তো মানুষকে বিভিন্নভাবে সৃষ্টি করেন। কাজেই তাদেরকে অবহেলার চোখে দেখা ঠিক না।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শেষে মঞ্চ থেকে নেমে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় তিনি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের কাছ থেকে নিজেদের তৈরি নানারকম শিল্পকর্ম ও চিঠি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর দ্বিতীয় পর্বে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান এমপি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন।
Discussion about this post