৭১ বাংলাদেশ ডেস্কঃযশোরের বাঘারপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দনের নিজস্ব প্রতিবেদক ইকবাল কবিরকে আটক করেছে পুলিশ। সরকারি কাজে বাঁধা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ তুলে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার সকালে বাঘারপাড়া থানা চত্বরে পুলিশের একটি সভা চলাকালে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ দাবি করেছে, পুলিশের সাথে বাঘারপাড়া পূজা উদযাপন পরিষদের বৈঠক চলছিল। এ সময় ইকবাল কবির সেখান গিয়ে বৈঠক সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য এবং পুলিশের সাথে তর্কবিতর্ক করেন। তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে সরকারি কাজে বাঁধা দেন। ওই বৈঠকে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী প্রধান অতিথি ছিলেন। বিষয়টি দেখার পর তার নির্দেশে ইকবাল কবিরকে আটক করা হয়।
কিন্তু ইকবাল কবির জানিয়েছেন, ওই বৈঠক শুরুর মাত্র ১০ মিনিট আগে মোবাইল ফোনে পুলিশ ডেকে নিয়ে কোন কারণ ছাড়াই তাকে আটক করে যশোর ডিবি অফিসে রাখা হয়। সেখানে সারারাত রাখার পর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। সে সময় তিনি জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঘারপাড়া থানার ওসি তার বিরুদ্ধে ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। এই মামলার রিমান্ড শুনানী (বুধবার) হওয়ার কথা রয়েছে।
এ দিকে বাঘারপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাস জানিয়েছেন, সোমবার পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে পুলিশের বৈঠক চলছিল। ওই বৈঠকের মাত্র ১০ মিনিট আগে তাকে পুলিশ ডেকে নিয়ে যায়। তিনি সেখানে গিয়ে পরিচিতি বন্ধুভাবাপন্ন পুলিশ সদস্যের সাথে আড্ডার ছলে কথা বলেন। এই বিষয়টি ভালভাবে নেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী। তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন তাকে আটক করার জন্য। পুলিশ তাকে আটক করতে গেলে ধস্তাধস্তি হতে পারে। তবে মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। থানা চত্বরে চার পুলিশকে মারপিট করা হয়েছে এই কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। জানা যায়, ইকবাল কবির বাঘারপাড়ার কয়েক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ লেখেন। বিশেষ করে বাঘারপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের ঘটনা তিনিই প্রথম গণমাধ্যমে তুলে আনেন। এরপর সেটি সারাদেশের পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ ছিল ওই দুর্নীতিবাজরা। তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের ভুল বুঝিয়ে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে। তিনি দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার বাঘারপাড়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। দৈনিক স্পন্দনের পক্ষ থেকে তার মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে।